পরীক্ষার ফলাফলই একমাত্র মাপকাঠি নয় সংলাপ দশম শ্রেণি

 

পরীক্ষার ফলাফলই একমাত্র মাপকাঠি নয়



শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। এ কথাটা আমরা সবাই জানি এবং মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি। কিন্তু শুধু পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা বাস্তব জীবনে আমাদের কতটুকু কাজে আসে বা আমরা প্রয়োগ করতে পারি তা একটা বড় প্রশ্ন। আবার শুধু কি পরীক্ষার ফলাফলই শিক্ষার্থীদের মেধা যাচাইয়ের একমাত্র মাপকাঠি? আমি তেমনটা মনে করি না।

আসলে পড়ালেখা হচ্ছে আমাদের জ্ঞান আহরণের মাধ্যম। অর্থাৎ জ্ঞানার্জনের জন্য পড়ালেখা। আর পরীক্ষা হচ্ছে পড়ালেখার মাধ্যমে আমাদের কতটুকু জ্ঞানার্জন হল তা পরিমাপ করার মাপকাঠি। কিন্তু এটা দিয়ে আমরা কারও মেধার পুরোপুরি পরিমাপ করতে পারি না। তবে প্রায়োগিক বা বাস্তব চিন্তা করলে দেখা যায় পরীক্ষার ফলাফল দ্বারা মেধাবী নির্ণয় করা হয়, কে কোন বিষয়ে পড়তে পারবে তা নির্ধারণ করা হয় এবং এই ফলাফল দিয়েই কর্মক্ষেত্রে সফলতা নির্ধারিত হয়ে থাকে।

এজন্য আমরা বলতে পারি, পরীক্ষার ফলাফল হল উচ্চশিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রের জন্য কর্মী বাছাইয়ের হাতিয়ার। আমাদের দেশে একটা ভুল ধারণা আছে- পরীক্ষায় কেউ ভালো ফলাফল করলেই সে মেধাবী বা ছাত্র হিসেবে ভালো। কিন্তু বাস্তবে ব্যাপারটা তা নয়। কারণ ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ে কাজ করার জন্য, ভিন্ন ভিন্ন কর্মক্ষেত্রে কাজ করার জন্য ভিন্ন ভিন্ন মেধা ও দক্ষতার প্রয়োজন হয়। এটি শুধু পরীক্ষার ফলাফল দ্বারা পরিমাপ করা সম্ভব হয় না। যেমন, যে ভালো ডিজাইনার হতে চায় তার মার্কেটিংয়ের জ্ঞান না থাকলেও চলে, আবার যে ম্যানেজমেন্টে ভালো তার মেকানিজমের জ্ঞান না থাকলেও চলে। অনেক সময় দেখা যায় পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করা ছাত্রটি কর্মক্ষেত্রে গিয়ে একটা সাধারণ সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।

আমার ধারণা, মেধা হচ্ছে ক্ষমতার পরিমাপ। আর পরীক্ষা হচ্ছে সেই জ্ঞান কতটুকু ব্যবহার হচ্ছে বা কাজে লাগছে তার পরিমাপ। অনেক সময় দেখা যায়, একজন ভালো ছাত্র কোনো কারণে পরীক্ষা ভালো দিতে পারেনি। তাই তার পরীক্ষার ফলাফলও ভালো হয়নি। কিন্তু এ কারণে আমরা বলতে পারি না যে সে মেধাবী নয়। আবার অনেক সময় দেখা যায়, ক্লাসের পেছনের বেঞ্চের বা খারাপ ফলাফল করা ছাত্রটা কর্মক্ষেত্রে ভালো করে। এর কারণ হচ্ছে, বিদ্যালয়ের গৎবাঁধা পড়ালেখা তাকে আকৃষ্ট করতে পারেনি। তাই সেখানে সে ভালো ফলাফল দেখাতে পারেনি। এছাড়া আরও একটা কারণ আছে। একজন শিক্ষার্থী কী বিষয়ে পড়বে সেটা তার পরিবারই ঠিক করে দেয়। সে কোন্ বিষয় ভালো বোঝে বা কোন্ বিষয়ে পড়তে আগ্রহী সেটা তারা না দেখেই তাদের ওপর একটা বিষয় চাপিয়ে দেয়। ফলে তারা অকালে ঝরে পড়ে।

তাছাড়া আমাদের প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা পুরোপুরি কর্মমুখী নয়। দেশে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারিং, আইন ইত্যাদি বিষয়ে পড়ার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও এ বিষয়গুলো কর্মক্ষেত্রের চাহিদা পুরোপুরিভাবে পূরণ করতে সক্ষম নয়। আমাদের প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা আরও কার্যমুখী করতে কর্তৃপক্ষকে অধিকতর সচেষ্ট হতে হবে।

Comments

Popular posts from this blog

Class X all Writing Pragraph,Report,Summary,Notice,Biography,Story,Process Writing,Diologue,Letter

অন্তবর্তী প্রস্তুতিকালীন মূল্যায়ন জীবন বিজ্ঞান কোষ বিভাজন

হীরক ও গ্রাফাইট গঠনের তুলনা করো?