দশম শ্রেণির ইতিহাসের মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক এর প্রশ্ন ও উত্তর Part 1 , 2 ,3
জকে আমার দশম শ্রেণির ইতিহাসের মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক এর প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করব।
(ক)
(1) স্মৃতিকথা কিভাবে ইতিহাসের উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে উদাহরণসহ লেখ
উত্তর:
স্মৃতিকথা কিংবা আত্মজীবনী একজন মানুষ তার সময়ের কথা উপস্থাপন করেছেন এখানে । এই থেকে নানান তথ্য এবং ওই সময়কার বিভিন্ন ঘটনার হদিশ পাওয়া যায় । সেই জন্য স্মৃতিকথা কিংবা আত্মজীবনী ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে । উদাহরণ হল - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনস্মৃতি, সরলা দেবী চৌধুরানীর জীবনের ঝরাপাতা, মনিকুন্তলা সেনের সেদিনের কথা, বিপিনচন্দ্র পালের সত্তর বছর , প্রভৃতি স্মৃতিকথা আধুনিক ইতিহাসের একটি মূল্যবান দলিল ।

(2) বাংলা নবজাগরণ ছিল কলকাতা শহর কেন্দ্রিক - মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো ।
উত্তর:
পাশ্চাত্য সভা ও সংস্কৃতি সংস্পর্শে এসে উনিশ শতকের বাঙালী সমাজে যে যুক্তিবাদি ও মানধতাবাদী আলোড়ন দেখা যায়, তাকে সাধারণ বঙ্গীয় নবজাগরণ। বলে আখ্যািয়ত হলেও এর ব্যাপ্তি ছিল খুবই সীমিত এবং একান্তাবেই কলকাতা শহর কেন্দ্রিক। ইতালীয় নবজাগরণ যে প্রবল গতিবেগ, উদ্যম ও বহুমুখী সৃজনশীলতা লক্ষ্য করা যায়, কলকাতা কেন্দ্রিক বঙ্গীয় নবজাগরণের তা অনেক ক্ষেত্রে অনুপস্থিত। শহর কলকাতার কিছু মুষ্টিমেয় ইংরেজি শিক্ষিত ব্যক্তির মধ্যে এই নবজাগরণের সীমাবন্ধ ছিল । হিন্দু সমাজের বৃহত্তর নিমবন্ধনের মানুষ, কৃষক সমাজ বা মুসলিম সমাজের সঙ্গে নবজাগরণের কোনাে সম্পর্ক ছিল না। ডা: অনীল শীল তাই একে এলিটিস্ট মুভমেন্ট বলে আখ্যায়িত করেছেন
(3) চুয়াড় বিদ্রোহ কে 'চুয়ার বিপ্লব' বললে কেনো ভুল বলা হবে ?
উত্তর:
পাশ্চাত্য সভা ও সংস্কৃতি সংস্পর্শে এসে উনিশ শতকের বাঙালী সমাজে যে যুক্তিবাদি ও মানধতাবাদী আলোড়ন দেখা যায়, তাকে সাধারণ বঙ্গীয় নবজাগরণ। বলে আখ্যািয়ত হলেও এর ব্যাপ্তি ছিল খুবই সীমিত এবং একান্তাবেই কলকাতা শহর কেন্দ্রিক। ইতালীয় নবজাগরণ যে প্রবল গতিবেগ, উদ্যম ও বহুমুখী সৃজনশীলতা লক্ষ্য করা যায়, কলকাতা কেন্দ্রিক বঙ্গীয় নবজাগরণের তা অনেক ক্ষেত্রে অনুপস্থিত। শহর কলকাতার কিছু মুষ্টিমেয় ইংরেজি শিক্ষিত ব্যক্তির মধ্যে এই নবজাগরণের সীমাবন্ধ ছিল । হিন্দু সমাজের বৃহত্তর নিমবন্ধনের মানুষ, কৃষক সমাজ বা মুসলিম সমাজের সঙ্গে নবজাগরণের কোনাে সম্পর্ক ছিল না। ডা: অনীল শীল তাই একে এলিটিস্ট মুভমেন্ট বলে আখ্যায়িত করেছেন
(3) চুয়াড় বিদ্রোহ কে 'চুয়ার বিপ্লব' বললে কেনো ভুল বলা হবে ?
উত্তর:
চুয়াড় বিদ্রোহ কে চুয়ার বিপ্লব বলা যাবেনা । কারণ চুয়াড় বিদ্রোহের সময় শুধুমাত্র নিপীড়িত, অত্যাচারিত, নিম্ন শ্রেণীর চুয়াড়াই এই আন্দোলনে যােগদান করেছিল। ইংরেজদের অত্যাচার ও নিপীড়নের হাত থেকে বাঁচার জন্য। কিন্তু এই আন্দোলনে যারা একটু উচ্চ পর্যায়ের ছিল তাদের মধ্যে প্রসারিত হয়নি, সেই কারণে চুয়াড় বিদ্রোহকে চুয়াড় বিপ্লব বলা যাবেনা।
খ) ভারতের মানচিত্রে নিম্নলিখিত স্থানগুলি চিহ্নিত করাে ও নাম লেখা :
সাঁওতাল বিদ্রোহের এলাকা, ফরাজি আন্দোলনের কেন্দ্র, কোল বিদ্রোহের এলাকা, মুন্ডা বিদ্রোহের অঙ্গা, সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহের এলাকা।
উত্তর ঃ-
গ) উপযুক্ত তথ্য সহযােগে নীচের ছকটি পূরণ করাে
চুয়াড় বিদ্রোহ কে চুয়ার বিপ্লব বলা যাবেনা । কারণ চুয়াড় বিদ্রোহের সময় শুধুমাত্র নিপীড়িত, অত্যাচারিত, নিম্ন শ্রেণীর চুয়াড়াই এই আন্দোলনে যােগদান করেছিল। ইংরেজদের অত্যাচার ও নিপীড়নের হাত থেকে বাঁচার জন্য। কিন্তু এই আন্দোলনে যারা একটু উচ্চ পর্যায়ের ছিল তাদের মধ্যে প্রসারিত হয়নি, সেই কারণে চুয়াড় বিদ্রোহকে চুয়াড় বিপ্লব বলা যাবেনা।
খ) ভারতের মানচিত্রে নিম্নলিখিত স্থানগুলি চিহ্নিত করাে ও নাম লেখা :
সাঁওতাল বিদ্রোহের এলাকা, ফরাজি আন্দোলনের কেন্দ্র, কোল বিদ্রোহের এলাকা, মুন্ডা বিদ্রোহের অঙ্গা, সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহের এলাকা।
উত্তর ঃ-
![]() |
এই ভাবে ম্যাপ পয়েন্টিং করতে হবে |
গ) উপযুক্ত তথ্য সহযােগে নীচের ছকটি পূরণ করাে
উত্তর ঃ-
সাময়িক পত্র / সংবাদ / সাহিত্য | সাম্পাদাক | সময়কাল | বিষয়বস্তু |
---|---|---|---|
বঙ্গদর্শন | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় | ১৮৭২ খ্রি: | পত্রিকায় প্রথম সংখ্যা থেকে ইতিহাস প্রত্নতত্ত্ব সঙ্গীত সাহিত্য সকলোচনাই বাঙালির শক্তি সাধনাই কৃষক সমস্যা হিন্দু মুসলিম সমস্যা প্রভূতি বিষয়ের উপর রচনা প্রকাশিত হতে থাকে । বঙ্গদর্শন প্রকাশিত বঙ্গমাতরম সংগীত পরবর্তীকালে বিপ্লবীদের অভিমন্ত্রে পরিণত হয় এই মধ্যে দিয়ে নেজ্জ্ব শিক্ষিত বাঙালি সমাজের সঙ্গে অপমার বাঙালি সমাজের সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনে গরিউঠেছে। |
সোমপ্রকাশ | দ্বারকানাথ বিদ্ধাভুবন | ১৮৫৮ খ্রি: | উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে সম প্রকাশ শিক্ষিত উদারপন্থী বাঙালির মধ্যবিত্তের অন্যতম প্রধান মুখপাত্র । পত্রিকার অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল এর মার্জিত রুচি পাজ্বল ভাষা , ও নির্ভীক সমালোচনা , দিনের পর দিন এই পত্রিকাই প্রকাশিত বিজ্ঞান চর্চায় কৃষকদের দুরবস্থা প্রভৃতি নানাবিধ প্রতিবেদন এতে নিয়মিত প্রকাশিত হয় । অত্যাচারিত নীলকর ও দমন-পীড়ন মোলোক নীল চষের বিরুদ্ধে সংগ্রামের অবতীর্ণ হয়েছিল সোমপ্রকাশ |
বামাবোধিনী | উমেশচন্দ্র দত্ত | ১৮৬৩ খ্রি: | বামাবোধিনী মূল উদ্দেশ্য হলো বামাবধনি সমাজের নারী শক্তি জাগরণের । নারীর প্রতি ব্যঞ্জনা অপরাধ ও শোষণের বিরুদ্ধে জোরালো প্রতিবাদ জানিয়েছিল বামাবধনী । এই পত্রিকায় দীর্ঘদিন ধরে নারী জাতি চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করে । নারীর জনমত গঠনের ব্যবস্থা করে দেয়। সেই সঙ্গে মেয়েদের লেখা গল্প কবিতা তাদের কর্তৃত্ব সাফল্য এমনকি রাজনৈতিক আন্দোলন তাদের অংশগ্রহণের প্রক্রিয়া নিয়মিত প্রকাশ করে নারী সমাজের মুখপত্রের পরিণত হয় বামাবধনি । |
গ্রামবার্তা প্রকাশিকা | হরিনাথ মজুমদার | ১৮৬৩ খ্রি: | গ্রাম বার্তা প্রকাশিকা যথায সমকালীন বাংলার গ্রাম সমাজের দর্পণ । পত্রিকায় প্রায় প্রতিটা সংখ্যা জুড়ে জমি,জমিদার,কৃষক, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা থাকতো । জমিদার নিপীড়ন পুলিশের অসাধুতা বিচারের নামে অবিচার সাধারণ মানুষের অসহায়তার খবর দিনের পর দিন অসীম সাহসী চেপেছে গ্রাম বার্তাই। |
হুতুম প্যাঁচার নকশা | কালীপ্রসন্ন সিংহ | ১৮৬১খ্রি: | হুতোম প্যাঁচার নকশা উনিশ শতকের প্রথমদিকে কলকাতা বাবু কালচার এবং বাংলার অবগাহিত সমাজ জীবনে এক অসাধারণ ও জীবন্ত দলিল । দূর্গ পূজো বারোয়ারী পূজা , চড়ক রথ স্নানযাত্রার প্রভিদের নামে হিন্দু সমাজের ভন্ডামি ভারামের সমালোচনা করা হয়েছে সমাজ চেতনা বঙ্গ বিদ্রুপের কষাঘাত হাস্যরস সব মিলিয়ে এটি একটি বাংলা অসামান্য গ্রন্থ। |
ঘ) নির্ভুল তথ্য দিয়ে ফাঁকা ঘরগুলো পূরণ করাে।
উত্তরঃ-
বিদ্রোহ আন্দোলন | সময়কাল | অঞ্চল | নেতৃত্ব | কারণ | প্রভাব |
---|---|---|---|---|---|
সাঁওতাল | ১৮৫৫-৫৬ খ্রিস্টাব্দে | ছোটনাগপুর পলাশী মানভুস বাঁকুড়া মেদিনীপুর বীরভূম প্রভূতি অঞ্চলে | সিধু , কানু | মহাজন ও ব্যবসায়ীদের কারচুপি ইংরেজদের অত্যাচার | সাঁওতাল পরগনা গডন ও মহাজনদের শোষণ হ্রাস |
মুন্ডা | ১৮৯৯-১৯০০ খ্রিস্টাব্দ | রাচি | বিরসা মুন্ডা | খুৎকাটি প্রথা এবং ধর্মানতরিকর | খুৎকাঠি প্রথা পরিবর্তন ও ছোটনাগপুর অঞ্চলে প্রজাস্বত্ব আইন পাশ করে । |
নীল | ১৮৫৯ | বাংলা | দিগম্বর বিশ্বাস ও বিষ্ণুচরন বিশ্বাস | নীলকর সাহেবদের অত্যাচার ও পক্ষপাত দুষ্ট বিচার ব্যবস্থা | নীল কমিশন গঠন ও কৃষক ও শিক্ষিত সম্প্রদায়ের ঐক্য |
ওয়াহাবি | ১৮৭২ খ্রিস্টাব্দ | নারকেলবেরিয়া | তিতুমীর | ইসলামের শুদ্ধিকরণ ও ইসলাম ধর্মের কুসংস্কার দূর করা । | মুসলিম সমাজ সংস্কার শুরু হয়। |
ফরাজী | ১৮০৪ খ্রিষ্টাব্দ | পূর্ববঙ্গ | দুধু মিয়া | ভারতবর্ষকে ইংরেজদের হাত থেকে উদ্ধার করা এবং বাংলাদেশে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা করা । | শেষ পর্যন্ত ব্রিটিশ বিরোধী কৃষক আন্দোলনের রূপ নিয়েছিল । |
দশম শ্রেণীর ইতিহাস মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক এর সমস্ত প্রশ্ন এবং উত্তর পার্ট 2

১. নারী ইতিহাস চর্চার প্রাসঙ্গিকতা সম্পর্কে আলােচনা করাে।
উত্তর :- প্রাচীন ভারতে নারীদের অধিকার ও মর্যাদা যথেষ্ট ছিল। স্ত্রী শিক্ষার ব্যাপক প্রচলন ছিল। কিন্তু কালক্রমে তারা সামাজিক বিধিনিষেধের বেড়াজালে আবদ্ধ হয়। উনিশ শতকের সমাজ সংস্কার আন্দোলনে স্ত্রী শিক্ষা ও নারীর মান উন্নয়নের বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব পেয়েছিলো । পরবর্তীকালে জাতীয় আন্দোলনে নারী জাতি সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করে। 1970 এর দশকে নারী ইতিহাস ইতিহাস চর্চায় সামনের সারিতে উঠে এসেছে। নারী-ইতিহাস আর লিঙ্গ ইতিহাস তখন একে অন্যের পরিপূরক। এছাড়া নতুন সামাজিক ইতিহাস উচ্চবর্গীয় মহিলাদের তুলনায় প্রান্তিক মহিলাদের বিষয়ে বেশি অগ্রাধিকার পেয়েছে । নারীবাদী ঐতিহাসিকরা মনে করেন আগে সামাজিক ইতিহাস পুরুষরাই প্রাধান্য পেতেন আর নারীরা ছিলেন উপেক্ষিত ।
২. গ্রামবার্তা প্রকাশিকা হলাে একটি ব্যতিক্রমী পত্রিকা আলােচনা করাে।
উত্তর :- ইতিপূর্বে পত্রপত্রিকা ও গ্রন্থের কথা আলোচনা করা হয়েছে সেগুলি সবই কলকাতা থেকে প্রকাশিত। এগুলিতে শহরের শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানসিক প্রতিফলন ধরা পড়েছিল। কিন্তু গ্রামবার্তা প্রকাশিকা হলো একটি ব্যতিক্রমী সাময়িক পত্র প্রথমে 1863 খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল মাসে মাসিক পত্রিকা রূপে নদীয়ার পূর্বতন পাবনা জেলার কুমারখালী গ্রাম থেকে প্রকাশিত হয়। সম্পাদক ছিলেন। গ্রামবার্তা প্রকাশিকা সাহিত্যপত্র হিসেবে আলােড়ন তুলেছিল। আসলে শহরের পত্র-পত্রিকায় গ্রামীণ মানুষ ছিল উপেক্ষিত।তাই গ্রামীণ সমাজ ও মানুষেরা সার্থ সংরক্ষণ ছিল গ্রামবার্তা প্রকাশিকা মূল উদ্দেশ্য। আর সম্পাদক কাঙাল হরিনাথ ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলােকে গ্রামীণ মানুষের । অভিজ্ঞতার আলোকে গ্রামীণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশা বঞ্চনা ও নিপীড়ন তাঁর সম্পাদিত পত্রিকায় তুলে ধরেছিলেন ।
৩. নীল বিদ্রোহ সম্পর্কে সমকালীন শিক্ষিত বাঙালী সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি কেমন ছিল?
উত্তর :- বাংলার মধ্যবিত্ত বহু মানুষ নীল বিদ্রোহের প্রতি সমর্থন জানায় । তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন অক্ষয় কুমার দত্ত, শিশির কুমার ঘোষ, গিরিশ ঘোষ, মনমোহন ঘোষ, দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ ও কিশােরী চাঁদ মিত্র। এছাড়াও বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, দীনবন্ধু মিত্র, মাইকে মধুসূদন দত্ত প্রমূখ ব্যাক্তি একদিকে যেমন নীলচাষীদের মামলা-মোকাদ্দমার খরচ বহন করতেন। অন্যদিকে তাদের লেখনীর মাধ্যমে নীলকরদের অত্যাচারের কাহিনী জনসাধারণের সামনে তুলে ধরতেন।
৪. উপযুক্ত তথ্য দিয়ে নীচের ছকটি পূরণ করো -
উত্তর :-
প্রতিষ্ঠান | ব্যাক্তিত্ব | অন্যান্য উদ্যোগ |
---|---|---|
স্কুল বুক সোসাইটি | ডেভিড হেয়ার | ১. হিন্দু কলেজ স্থাপনের উদ্যোগ , ২. বাংলা বিদ্যালয় স্থাপন |
ব্রাহ্মসমাজ | রাজা রামমোহন রায় | ১. ধর্ম সংস্কার ও সমাজ সংস্কার , ২. সতীদাহ প্রথা নিবারণ |
অ্যাকাডেমিক অ্যাসোসিয়েশন | দেরোজিও | ১. ইয়ং বেঙ্গল দল গঠন , ২. সংস্কার আন্দোলন |

(১) হিন্দু মেলা টীকা লেখো ?
উত্তর:-
সূচনা- ভারতীয় জাতীয় জাগরণে বাংলার কয়েকটি সমিতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল যার মধ্যে নবগােপাল মিত্রের চৈত্র মেলা যার পরে নাম হয় হিন্দু মেলা ছিল অন্যতম। 1867 খ্রিস্টাব্দে রাজনারায়ণ বসু, নবগােপাল মিত্র এটি গঠন করেন এবং এর স্থায়িত্ব ছিল প্রায় 13 বছর।
উদ্দেশ্য:-
হিন্দু মেলার প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্দেশ্য গুলি হল:
1. দেশীয় ভাষা চর্চা করা।
2 স্বদেশী ভাবধারায় দেশবাসীকে উদন্ধ করা ।
3. হিন্দু জাতিকে জাতীয়তা আদর্শে ভারতীয়দের মধ্যে ঐক্য গড়ে তােলা।
4. এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রসার করা।
5. জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলিকে মর্যাদা দেওয়া।
6. সাধারণ মানুষের মধ্যে হিন্দু ধর্মের অতীত গৌরব গাঁথা ছড়িয়ে দেওয়া।
কর্মসূচি:
এই সংগঠনের কর্মসূচির আওতায় ছিল লাঠি, লেয়ার খেলা, প্রদর্শনী, দেশাত্মবোধক সংগীত, বক্তৃতা প্রভৃতি। এই সকল কর্মসূচির মাধ্যমে ভারতে জাতীয়তাবাদের বহিঃপ্রকাশ ঘটানাের চেষ্টা করা হয়।
বৈশিষ্ট্য:
এর বৈশিষ্ট্য গুলি হল
1. এই প্রতিষ্ঠানটি এর সকল সদস্যই ছিল হিন্দু। 2. এই মেলায় স্বরচিত কবিতা, সংগীত পরিবেশিত হতাে। উদাহরণস্বরূপ 14 বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার হিন্দু মেলার উপহার কবিতা টি এখানে আবৃত্তি করে শুনিয়েছিলেন।
সদস্য সমূহ-
হিন্দু মেলা সদস্যদের মধ্যে উল্লেখযােগ্য সদস্যগণ ছিলেন রাজনারায়ণ বসু, গিরিশচন্দ্র ঘােষ, পিয়ারিচরণ সরকার , রমানাথ ঠাকুর, প্রমুখ
বসু মন্দির টিকা লেখো ?
উত্তর ভূমিকাঃ- 1917 খ্রিস্টাব্দে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু বিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। প্রধানত, জীব এবং জড় বস্তুগুলির বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা করা ছিল এর অন্যতম উদ্দেশ্য। এটি 'বােস ইন্সটিটিউট নামেও পরিচিত ছিল।
প্রতিষ্ঠা 1915 খ্রিস্টাব্দে জগদীশচন্দ্র বসু প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যাপকের পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে 1917 খ্রিস্টাব্দে বসুবিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। বিজ্ঞানের নির্দিষ্ট শাখায় মৌলিক গবেষণা করার জন্য তিনি এটি প্রতিষ্ঠা করেন।
পাঠ্যবিষয়ঃ- এখানে পদার্থবিদ্যা, রসায়নবিদ্যা ছাড়াও মাইক্রোবায়ােলজি, বায়োকেমিস্ট্রি, বায়োফিজিক্স, পরিবেশ বিদ্যা, অ্যানিম্যাল ফিজিয়ােলজি, বায়ােইনফরমেটিক্স প্রভৃতি বিষয়গুলি নিয়ে গবেষণার সুযােগ আছে। এমনকি এখানে মহাকাশ বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশােনা করা এবং গবেষণা করা যায়। অবদান ও বসুবিজ্ঞান ।অবদান ও বসুবিজ্ঞান মন্দির বিভিন্ন বিষয়ে তার অবদান রাখে ।যে টিকা আবিষ্কারে কিংবা উদ্ভিদের যে প্রাণ আছে তার প্রমাণে প্রতিষ্ঠানটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। তা ছাড়া আধুনিক সলিকিউলার বায়ােলজির সূচনা হয় এখানে।
আয়ােনােসিটাল ফসফেট চক্রের আবিষ্কার এখানেই ঘটেছিল। জগদীশচন্দ্র বসুর বহু পাণডুলিপি ও মিউজিয়াম এখানে রয়েছে। এখানকার কুতী গবেষকেরা এখান থেকে এস, এস, ভাটনগর পুরস্কার, হােমি জাহাসির ভারা ফেলােশিপ প্রভূতি পেয়ে থাকেন। আর্থিক সাহায্য ও প্রাথমিক পর্বে জগদীশচন্দ্র বসু তার পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তােলেন। নবম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় এই প্রতিষ্ঠানকে 30 কোটি টাকার তহবিল দান করা হয়।
তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার টিকা লেখো ?
উত্তর
প্রেক্ষাপটে স্বাধীনতা আন্দোলনে অক্ষয় মেদিনীপুর জেলার ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর এই আন্দোলনের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র ছিল বর্তমান পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুক, মহিষাদল, সুতাহাটা। ১৯৪২ সালে ।ব্রিটিশদের নির্যাতন তখন তুঙ্গে। মহিষাদল থানার অন্তর্গত বেশ কয়েকটি গ্রামে ছােট শিশু থেকে বৃদ্ধ কেউই বাদ যেত না শাসকের অত্যাচার থেকে। সেই সময়ে মহিষাদলের মাশুড়িয়া, চণ্ডীপুর-সহ কয়েকটি গ্রামে ৪৬ জন মহিলার সম্মানহানি করে ব্রিটিশ সেনারা।
মুহাম্মদ গাঁথি ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ডাক দিলে তমলুকের মাতঙ্গিনী হাজরা এই আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ লেন। মেদিনীপুরে মাতঙ্গিনী হাজরা ও রামচন্দ্র বেরার নেতৃত্বে হাজার হাজার মানুষ ১৯৪২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর নানাদিক থেকে এসে তমলুক থানা ও আদালত অবরোধ করেন। ৭৩ বছর বয়স্কা কৃষণকবধু মাতঙ্গিনী হাজরা তমলুক আদালতের উপরে ভারতের ত্রি-রঞ্জিত পতাকা তুলতে গিয়ে ব্রিটিশের গুলিতে প্রাণ হারান।
সরকার গঠনঃ- এসব ঘটনার মধ্যেই স্বাধীনতা সংগ্রামী সতীশচন্দ্র সামন্ত নেতৃত্ব নারকেলদহ গ্রামে স্বাধীনতা সংগ্রামী এক গােপন বৈঠক করেন। সেই বৈঠকেই ইংরেজদের শাসন অস্বীকার করে নতুন সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত হয় ।১৯৪২ সালের ১৭ ডিসেম্বর তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার গঠিত হয়। সর্বাধিনায়ক হন বিপ্লবী সতীশচন্দ্র সামন্ত। এই সরকারের বিভিন্ন বাহিনী গঠিত হয়। এই জাতীয় সরকার সে সময় পৃথক শাসনব্যবস্থা গড়ে তুলেছিল। আইন- শুজ্খলা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বিচার, কৃষি, প্রচার, সার ইত্যাদি বিভাগে পৃথক পৃথক সচিব নিয়ােগ করা হয়েছিল। সবার উপরে ছিলেন সর্বাধিনায়ক বিপ্লবী সতীশচন্দ্র সামন্ত। অর্থসচিব ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। অজয় কুমার মুখোপাধ্যায় এবং সমর ও স্বরাষ্ট্রসচিব ছিলেন সুশীল কুমার ধাড়া। ১৯৪৪ সালে ৩০ শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্থায়ী ছিল তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকারের অস্তিত্ব।
সাফল্য -সতীশচন্দ্র সামন্ত দীর্ঘ ২১মাস এই সরকার বৃটিশ সরকার অচল করে স্বাধীন সরকার প্রতিষ্ঠা করে রেখেছিল আজকের তমলুক ও হলদিয়া মহকুমা এলাকাজুড়ে। বৃটিশ ভারতে মহারাষ্ট্রের সাতার, উত্তরপ্রদেশের বালিয়া ও তমলুকে তিনটি জাতীয় সরকার তৈরি হয়েছিল। এদের মধ্যে তমলুকেই প্রতিরােধ সবচেয়ে বেশি হয়েছিল এবং এখানেই সরকার টিকেছিল বেশি দিন। অসংখ্য মহিলা সেদিন নির্যাতিতা হয়েছিলেন। শুধু তমলুক মহকুমায় শহিদ হয়েছেন ৪৮ জন। প্রায় সমসংখ্যক শহিদ হন কাঁথি মহকুমায়। সাধারণ মানুষের উপর বৃটিশের অত্যাচারের সীমা ছিল না। সে সময়ে গান্জীজি জুটে এসেছিলেন মহিষাদলে এবং পাঁচদিন ছিলেন।
(২) প্রঃ-ভারত মাতার চিত্র-জাতীয়তাবাদের কিভাবে উন্মেষ ঘটায়।
উত্তর :
ভূমিকাঃ- ব্রিটিশ শাসিত পরাধীন ভারতবর্ষে চিত্রশিল্পীগণ চিত্রের মাধ্যমেও ভারতীয় জাতীয়তাবাদ ফুটিয়ে তােলেন। ভারতীয় জাতীয়তা বােধ সুষ্টিকারী চিত্রগুলির মধ্যে অন্যতম প্রধান ছিল অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর অঙিত ভারতমাতা চিত্রটি। জাতীয়তাবাদী ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভারতমাতা চিত্রের মাধ্যমে বিশ শতকে জাতীয়তাবাদী চেতনার প্রসার ঘটান। চিত্রে 'ভারতমাতা হলেন ভারতবর্ষের প্রতীক।
ভারতমাতার চিত্রকর-ভারতমাতা' চিত্রের চিত্রকর হলেন অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
ভারতমাতার
অলঙ্কলঃ- 1902 খ্রিস্টাব্দে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর 'বঙ্গমাতা চিত্র অঙ্কন করেন। পরে ভারতের স্বদেশী। আন্দোলনের আবহে 1905 খ্রিষ্টাব্দে তা ভারতমাতা রুপে খ্যাতি লাভ করে।
সৃষ্টি ও স্রষ্টা- অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও ভবো ভারতমাতা খ্রিস্টাব্দে ভারতমাতা রূপে খ্যাতি লাভ করে।
ভারতমাতার চিত্রের বর্ণনাঃ- ভারতমাতা হলেন গৈরিক বসন পরিহিতা এক দেবী। ভারতমাতার চারটি হাত। তিনি চারটি হাতে ধরে আছেন ধানের গােছা, সাদা কাপড়, বেদ ও জপমালা। তিনি সঞ্জ পৃথিবীর উপর দাঁড়িয়ে আছেন, তার পায়ের কাছে চারটি পদ্মফুল এবং পিছনে নীল আকাশ।।
উপসংহারঃ
ভারতমাতা ভারতবর্ষের প্রতীক। তিনি তার সন্তানদের অন্ন, ব, শিক্ষা ও দীক্ষা প্রদান করেন। ভারতমাতা চিত্রটি ব্রিটিশবিরােধী আন্দোলনকালে জাতীয়তাবাদের প্রতীকে পরিণত হয়েছিল। ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতে ভারত মাতা চিত্রটি জনসাধারণের মধ্যে। জাতীয়তাবােধের সঞ্চার করে।
(3) ছাপাখানার বিস্তার ও শিক্ষার প্রসারের সম্পর্ক সমানুপাতিক - উনিশ শতকের মধ্যভাগ থেকে বিশ শতকের প্রথম ভাগে বাংলার শিক্ষা বিস্তার প্রসঙ্গে উক্তিটির ব্যাখ্যা করাে।
উত্তর:-
ভূমিকা :- অষ্টাদশ শতকের শেষ দিকে ইউরোপের খ্রিষ্টান মিশোনারীদের মাধ্যমে বাংলার বিভিন্ন স্থানে ছাপাখানার প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলার শিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে এই ছাপাখানা গুলির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল ।
প্রেক্ষাপট:- বঙ্গদেশ আধুনিক ছাপাখানার প্রতিষ্ঠিতার আগে হতে লেখা বইপত্রের দ্বারা শিক্ষাগ্রহণের কাজ চলত , এই বইয়ের মূল্য খুব বেশি হতো বলে এইসময় নিম্নবিত্ত দরিদ্র সমাজে শিক্ষার প্রসারে বিশেষ সুযোগ ছিল না তাই এই সময়ে সমাজের অর্থাৎ ছাপা বইপত্রের বাজারে আসার আগে বাংলার শিক্ষার প্রসার ছিল খুবই সীমাবদ্ধ ।
ছাপা বইয়ের বাজার :- উনিশবিংশ শতকের শুরু থেকে ছাপাখানা ছাপাই প্রচুর সংখ্যক বই পত্র আসতে শুরু করল । একদিকে বইয়ের যোগান ছিল বিপুল অন্যদিকে এগুলো দামেও ছিল সস্তা । ফলে দরিদ্র অসাধারণ শিক্ষার্থী ও পাঠকের হাতে অতি সহজে ছাপাখানার ছাপা বইপত্র পৌঁছে যায়, ফলে বাংলার প্রচুর শিক্ষাবিস্তার শুরু হয় ।
পাঠ্য পুস্তকের সরবরাহ :- ছাপাখানা গুলি মুদ্রিত বইপত্র বিনামূল্যে সমস্ত ছাত্র ছাত্রী দের হতে পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্য ক্যালকাটা স্কুল বুক সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত হয় , ফলে শহর ও গ্রামের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে যেসব সাধারণ মানুষ বিদ্যা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত ছিলো তাদের হাতে ছাপাখানার মুদ্রিত পাঠ্য বই পৌঁছে যায় ।
উপসংহার :- পরিশেষে বলা যায় যে মুদ্রণ বিপ্লব এর ফলে শিক্ষার প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে বাণিজ্যের প্রসার ও ঘটে বাংলার মুদ্রণ বিপ্লব এর ফলে বিভিন্ন বিষয়ের পাঠ্যপুস্তক প্রবর্তন সম্ভব হয় এইভাবে ছাপাখানার বিস্তার ও শিক্ষার বিস্তার সমান্তরালভাবে চলতে থাকে ।
(৪) একটি ভারতের মানচিত্রে প্রদত্ত স্থানগুলি চিহ্নিত করাে — মিরাট, এলাহাবাদ, ব্যারাকপুর, দিল্লি, ঝাঁসি, শ্রীরামপুর, বোলপুর ?
উত্তর :-

Comments
Post a Comment